(প্রকাশ ২০ আগস্ট ২০২০)  সম্প্রতি মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রত্যাবাসিত হয়ে ২৫৫ জন বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিক দেশে এসে উত্তরার দিয়াবাড়িস্থ সরকার নির্ধারিত কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন পালন শেষে পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তারের পর কাশিমপুর কারাগারে আটক রয়েছেন। আদালত প্রদত্ত দশ দিনের তদন্তসীমা বেধে দেয়ার পরেও দু’দুবার তাদের আটকাদেশের সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য পুলিশ আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশ মিশন সূত্র থেকে প্রাপ্ত গনমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৫৫ জন অভিবাসীর অধিকাংশই ‘অনিবন্ধিত হয়ে পড়া’ এবং মদ্যপানসহ গুরুতর নয় এমন অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত যাদের বেশীর ভাগই অর্ধেক কিম্বা তার অধিক সাজা ভোগ করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমা লাভ করে মুক্ত অবস্থায় দেশে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন। এদের কেউ কেউ সংশ্লিষ্ট দেশে টেলিকম নীতি মেনে না চলার জন্য শাস্তি ভোগ করেছেন। এদের কেউ কেউ কেবলমাত্র টক টাইম বিক্রির অপরাধে দণ্ডিত হয়েছিলেন যা বাংলাদেশে বহুল প্রচলিত চর্চা এবং সাধারণত অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়না। বন্দিদের কাউকেই প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে বহির্বিশ্বে ‘বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করায়’ এবং ভবিষ্যতে তারা খুন, ডাকাতি, সন্ত্রাসবাদ ও নাশকতা কার্যক্রম সংঘটন করতে পারে এমন সন্দেহে কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিজিউর এর ৫৪ ধারার অধীনে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী অপরাধ’ সংঘটনেরও অভিযোগ আনা হতে পারে।

একই সাথে ২৫৫ জন অভিবাসীর অপরাধ সংঘটনের অভিপ্রায়ও পুলিশ পরিষ্কারভাবে জানায়নি। উপরন্তু, ভবিষ্যতে অপরাধ সংঘটিত হতে পারে এমন সন্দেহে কাউকে আটক করা সম্পূর্ণ বেআইনি। আটককৃত অভিবাসীর পরিবার কেবল তাদের কাশিমপুর কারাগারে অবস্থানের খবর ছাড়া কোন তথ্যই জানেন না। গণমাধ্যমে আমরা এও জেনেছি যে, কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের পরিবার তদন্তকারী কর্মকর্তার দ্বারা হয়রানি এবং জোর পূর্বক অর্থ আদায়ের শিকার হচ্ছেন। পরিবারগুলো চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন এবং গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করছেন।

এমতাবস্থায়, আমরা বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস (বিসিএসএম) এর ১৯ টি সদস্য অনতিবিলম্বে  ২৫৫ জন আটক অভিবাসীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

ধন্যবাদান্তে,

ড. সি আর আবরার
চেয়ার, বিসিএসএম
সৈয়দ সাইফুল হক
কো—চেয়ার, বিসিএসএম


বিসিএসএম
সদস্যবৃন্দ:

 

রেফিউজি এন্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু), ওয়্যার্বি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, বাংলাদেশি অভিবাসী মহিলা শ্রমিক এসোসিয়েশন (বমসা), মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাসুগ, অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ), হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস), ইমা রিসার্চ ফাউন্ডেশন, ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক অব অল্টারনেটিভ ফিন্যান্সিয়াল ইন্সটিটিউশন (ইনাফি) বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কন্সট্রাকশন এন্ড উড ওয়ার্কারস ফেডারেশন (বিসিডব্লিউডব্লিউএফ), ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল একশন (ইপসা), বাংলাদেশ অভিবাসী অধিকার ফোরাম (বোয়াফ), বাস্তব, রাইটস যশোর, সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন্স (ডেভকম) লিঃ, ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশন, চেঞ্জ মেকার্স।